জাহাঙ্গীর আলম শোভন // ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের পণ্য ডেলিভারি নিয়ে, সমস্যা আর অভিযোগের পাহাড় জমে আছে। কোথায় সমস্যা দিন দিন সমাধান হবে তা না, মনে হয় যেন আরো বাড়ছে। সমাধানের কোনো লক্ষণ নেই। কিন্তু তাই বলে কি কোনো সমাধান হবে না। সত্যি বলতে কি খুব সহজে অনেক বড়ো কিছু হতে যাচ্ছে এমনটা নয়। তবে অন্য সব সেক্টরের মত আস্তে আস্তে কিছু উন্নতি হবে বলা যায়।
তাহলে এখন কি বসে বসে অপেক্ষা করবো? কখন পরিস্থিতি পরিবর্তন হবে সেদিনের জন্য। অবশ্যই না। যারা ব্যবসায় নেমে গেছেন তাদের তো আর হাত পা ঘুটিয়ে বসে থাকার সুযোগ নেই। এই পরিস্থিতিতে সমস্যাগুলো কিছুটা লাঘব করার জন্য ইকমার্স ব্যবসায়ীদের দিক থেকে কিছু সর্তকতার ব্যাপারে আজ আলোকপাত করতে চাই।
- ডেলিভারি দেয়ার আগে ফোন নাম্বারসহ গ্রাহকের বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন। গ্রাম হলে বাড়ীর নাম, পিতা বা স্বামীর নাম, গ্রাম, পাড়া, পোষ্ট অফিস, পোষ্ট কোড, থানা, উপজেলা, জেলা। গ্রামের বাড়ীর নাম আর পাড়া না জানলে খুঁজে বের করা কঠিন। পোষ্ট অফিস এবং পোষ্ট কোড নাম্বার থাকলে পণ্য এলাকা ভিত্তিক ক্যাটাগরি করতে সহজ হয় এবং এরিয়া খুঁজে পাওয়া যায়। ফোন নাম্বার একাধিক দিতে পারেন। দিতে পারেন প্রযত্নে অন্য আরেকজনের নামও, অবশ্য যদি আপনার কুরিয়ার কোম্পানির ফরম্যাট সেটা সাপোর্ট করে। এক মিনিট সময় বেশী লাগলেও এগুলো করুন।
- সঠিকভাবে প্যাকিং করুন। এক এক ধরনের পণ্য এক একভাবে প্যাক করতে হয়। মজবুত প্যাক আপনার পণ্যের নিরাপত্তা দেবে। প্যাকের গায়ে কি পণ্য তা লিখে দিন। ১০ কেজির বেশী ওজন হলে ধরার জন্য হাতল রাখুন।
- ডেলিভারি দেয়ার আগে ফোন করে আরেকবার নিশ্চিত হয়ে পাঠান।
- কুরিয়ার কোম্পানির লোককে আগে থেকে এনে বসিয়ে রাখবেন না। প্যাক হলে তারপর ডাকুন। অনেক বেশী প্যাক হলে সকাল থেকে দিতে শুরু করুন। কারণ আপনি হয়তো ভাববেন বিকেল ৫টায় দেবেন। কিন্তু দেখাগেলো ৫টায় নিয়ে সে বেচারা আর সময় কুলাতে পারেনি প্রসেস করে মাল ডেলিভারি দেয়ার। কারণ সেতো শুধু আপনার মাল পাঠায় না আরো ১০০ জনের মাল পাঠায়। এখন যে ব্যক্তি ১১ টায় মাল দিয়ে গেছে তারটা নিশ্চয় আগে যাবে।
- মাল দেয়ার সময় কাস্টমারের নামে একটা চালান লিখুন। চালানটা আপনার কোম্পানির ছাপানো চালান হওয়া বাঞ্ছনীয় এতে কাষ্টমার ডিটেইল এবং প্রোডাক্টস ডিটেইল থাকবে। আপনার ফার্মেও ডিটেইল মানে নাম, ঠিকান্ ফোন নাম্বার ও কন্টাক্ট পার্সন এসবতো থাকবেই।
- চালানের নাম্বার অনুসারে আপনি একটা রেজিস্টার রাখুন। রেজিস্টারে চালানের অফিস কপিতে কুরিয়ার কোম্পানির লোকের নাম ফোন নাম্বার এবং স্বাক্ষর রাখুন তারিখ সহ। ডেলিভারি তথ্যতো থাকবেই। অবশ্যই কুরিয়ার কোম্পানির রশিদের নাম্বারটা লিখে রাখবেন
- কুরিয়ার কোম্পানির এজেন্টদের ডিরেক্টরি বা তালিকা রাখুন। তাদের ফোন নাম্বার ও ঠিকানা রাখুন। হেড অফিসের অপেক্ষায় বসে না থেকে রশিদ নাম্বার দিয়ে আপনি নিজেই খোজ নিন বা সময়মত ডেলিভারি দিতে বলুন।
- ক্যাশ অন ডেলিভারি বা কন্ডিশনাল ডেলিভারি হলে টাকা বুঝে নিন, বেশীদিন হিসেব ফেলে রাখবেন না।
- কোনো কারণে পণ্য ফেরত আসলেও তা ভালোভাবে বুঝে নিন।
- চেষ্টা করবেন ডিজিটাল ফরম্যাট যেসব কুরিয়ার ব্যবহার করে তাদের সেবা নিতে। বিশেষ করে যাদের স্ক্যানিং রিডার এবং এসএমএস আপডেট সুবিধা আছে।
যেহেতু সমস্যার সমাধান আপনার হাতে নেই। সেহেতু আপনি নিজে এই ব্যাপারগুলোতে সতর্ক থাকলে কিছু সমস্যাতো কমতে পারে। কারণ ইকমার্স শপের বিপক্ষেও নানা অভিযোগ আছে কুরিয়া কোম্পানির। আর গ্রাহকরাও কখনো কখনো ভোগান্তির কারণ হয়ে দাড়ায়।